দোয়া কবুল হওয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত

দোয়া কবুল হওয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত

দোয়া কবুল হওয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত, দোয়া এটি মুমিনের হাতিয়ার । আমরা সকলেই জীবনের কোনো না কোনো বাঁকে দাঁড়িয়ে দোয়া করি। কারো সুস্থতা, কারো রিযিক, কারো ভালোবাসা কিংবা হিদায়াতের জন্য । আমরা অনেক সময় দোয়া কবুল হতে দেরি হলে হতাশ হয়ে পরি, বলি “আল্লাহ দোয়া কবুল করছেন না!”

কিন্তু প্রশ্ন হলো—আমরা কি সত্যিই দোয়া কবুলের শর্তগুলো পূরণ করছি?

আজকের এই লেখায় আমরা জানব দোয়া কবুল হওয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত যা আমাদের আমলে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ।

১. আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠতা

দোয়ার সময় আল্লাহর প্রতি পুরোপুরি একনিষ্ঠ হতে হবে। মন থেকে বিশ্বাস করতে হবে—একমাত্র আল্লাহই আমার সমস্যার সমাধানকারী।

আল্লাহ বলেন: তোমরা আল্লাহর নিকট দোয়া করো একনিষ্ঠভাবে ও বিনয় সহকারে। নিশ্চয়ই তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (সূরা আল-আরাফ এর ৫৫)

২. গুনাহ থেকে তাওবা করা

গুনাহ আমাদের আর আল্লাহর মাঝে একটি প্রাচীর তৈরি করে। তাই দোয়ার আগে অন্তর থেকে তাওবা করা এবং ভবিষ্যতে সেই গুনাহ না করার সংকল্পই আমাদের দোয়াকে কবুলের দিকে নিয়ে যায়।

৩. হালাল রিজিক 

রাসুল (সা.) বলেন: “এক ব্যক্তি দীর্ঘ সফর করে, ধুলায় ছেয়ে গেছে, চুল এলোমেলো। সে হাত তোলে আকাশের দিকে, ‘হে আমার প্রতিপালক! হে আমার রব!’ অথচ তার আহার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারামে পুষ্ট। তাহলে তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?” (সহীহ মুসলিম) অর্থাৎ, হালাল জীবিকা ছাড়া দোয়া কবুল হওয়া কঠিন।

৪. নির্দিষ্ট সময় ও অবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া

দোয়ার জন্য কিছু মুহূর্ত আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে প্রিয়।

যেমন:

  • তাহাজ্জুদের শেষ অংশ
  • জুমার দিনের শেষ ঘণ্টা (বিশেষ করে আসর থেকে মাগরিবের সময়)
  • রোজা ইফতারের মুহূর্ত
  • বৃষ্টি পড়ার সময়
  • সিজদার সময় ইত্যাদি

এই মুহূর্তগুলো আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় হয়।

৫. নিশ্চিত বিশ্বাস ও ভরসা রাখা

দোয়া করার সময় অন্তরে এই বিশ্বাস থাকতে হবে—আল্লাহ শুনছেন, তিনিই দেবেন, শুধু হয়তো সময়টা এখনো আসেনি।

রাসুল (সা.) বলেন: “তোমরা দোয়া করো এ বিশ্বাসে যে, আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন। তবে জেনে রেখো, তিনি এমন অন্তর থেকে দোয়া কবুল করেন না, যে অন্তর গাফেল ও উদাসীন।” (তিরমিজি)

৬. ধৈর্য ও ইতিবাচক মনোভাব রাখা

দোয়া করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করা যাবে না, আমরা কিছুদিন দোয়া করে হতাশ হয়ে পড়ি। মনে করি আমার দোয়া বুঝি কবুল হবে না। হতাশ হয়ে দোয়া করা বন্ধ করে দিই আমল করা বন্ধ করে দিই। এটা মোটেও ঠিক নয়, হয়তো এখনই সঠিক সময় নয় তাই আল্লাহতালা দিচ্ছেন না। কাজেই আমাদের মনোভাব পজেটিভ থাকতে হবে, যে আমার তো অবশ্যই কবুল হবে। এবং ধৈর্য সহকারে নিয়মিত দোয়া করেই যেতে হবে। অবশ্য এখানে একটি শর্ত রয়েছে চাওয়াটা অবশ্যই হালাল হতে হবে  কাজেই দোয়া কবুলে বিলম্ব হলে হতাশ হওয়া যাবে না হয়তো আল্লাহ আপনাকে দোয়া কবুলের মাধ্যমে নয়, অন্য ভালো কিছুর মাধ্যমে প্রতিদান দিচ্ছেন।

যা আপনি এখনই বুঝতে পারছেন না।

৭. অন্যদের জন্য দোয়া করা

যখন আপনি কারো জন্য দোয়া করেন, আল্লাহ সেই দোয়ার সমান কিছু আপনাকেও দিয়ে দেন।

রাসুল (সা.) বলেন:“এক মুসলিম তার অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে, একজন ফেরেশতা বলে, ‘তুমি তার জন্য যা চাচ্ছ, আল্লাহ তোমার জন্যও তা কবুল করুন।” (সহীহ মুসলিম)

আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং উপকারে আসবে ।

দোয়া কবুলের গল্প পড়তে ভালো লাগলে এই বইটি সংগ্রহ করতে পারেন ।

এই বইটি আপনাকে মোটিভেশন দেবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *